শীতে পা ফাটা-প্রতিকার: শীতের সময় অনেকেরই পা ফাঁটে। তাই সবারই কম বেশি আলাদা করে পায়ের যত্ন নিতে হয়।
পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়া কষ্টকর ও বিব্রতকর সমস্যা। শীতে পানি কম পান করার কারণে অনেকেরই শরীর ডিহাইড্রেট থাকে।
তাছাড়া শীতে বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকে। আবার নোংরা থাকার কারণেও পা ফাটতে থাকে। পা ফাটলে পায়ের গোড়ালিতে যন্ত্রণাও হয়।
দীর্ঘদিন পা ফাটা থাকলে ইনফেকশন হতে পারে, পায়ে ব্যথা অনুভূত হয়, পা ফুলে যায় এবং দৈনন্দিন চলাফেরা ব্যাহত হয়।
কারণ:
খালি পায়ে হাঁটা, দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করা, শক্ত জুতা পরা, ধুলাবালিতে কাজ করা, পরিমিত পানি পান না করা। অতিরিক্ত পা ঘামা,
ভিটামিন এ, সি এবং ই-এর অভাব। আবার কিছু রোগের কারণেও পা ফাটে। যেমন- পামোপ্ল্যান্টার কেরাটোডার্মা এক ধরনের জিনবাহিত
রোগ। এই সমস্যা থাকলে রোগীর ত্বক পুরু হয়। মোটা ও পুরু চামড়া সংগত কারণেই খসখসে ও শক্ত হতে থাকে । যা অত্যধিক শুষ্কতায়
ফেটে যায়। ফাটা স্থানে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে ঘা হতে পারে। সোরিয়াসিস এক ধরনের চর্ম রোগ। যার প্রকোপ বাড়ে শীতে।
এই রোগে হাতে পায়ে চাকা চাকা দাগ হয়ে যায়, চুলকানি, চামড়া ওঠা এ রোগের লক্ষণ। হাত ও পায়ের তালুতে সোরিয়াসিস হলে আক্রান্ত
স্থান ফেটে গিয়ে লাল মাংস দেখা যায়। শীতকালে এই ফাটা বেড়ে যায়। টিরিয়াসিস রুব্রা পাইলারিস জিনবাহিত রোগ। এ রোগ যাদের
আছে, শীতকালে তাদের হাত পা প্রচ- শুষ্ক হয়ে যায় এবং সোরিয়াসিসের মতোই পা ফেটে যায়।
প্রতিকার: শীতে পা ফাটা-প্রতিকার
পা ফাটা সমস্যা প্রতিকারের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ত্বক নরম রাখা।
তাই শীতের সময়ে যা করতে হবে, তাহলো খালি পায়ে না
হাঁটা। আরামদায়ক নরম জুতা পরা। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা।
নিয়মিত পা ধুয়ে মুছে কিছুটা ভেজা থাকা অবস্থায় পায়ে লোশন বা
ভ্যাসলিন ব্যবহার করা। ঝামা পাথর বা পিউমিস পাথর দিয়ে পা ঘষে পায়ের মরা চামড়া তুলে নেওয়া এবং পরবর্তীতে নারিকেল তেল
মালিশ করা। শীতে চেষ্টা করা সুতির মোজা পরে থাকা।
এতে ঠান্ডা, ধুলাবালি, দূষণ থেকে পা ভালো থাকবে।
সপ্তাহে একদিন পায়ের যত্ন নেওয়া। আধা বালতি কুসুম গরম পানিতে ১ চিমটি লবণ দিয়ে সেখানে পা আধা ঘণ্টা ডুবিয়ে রাখলে বেশ
আরাম পাওয়া যায়। যাদের পা ফাটা সমস্যা রয়েছে শুধু তারাই নন, পা ভালো রাখতে সবাই এটা করতে পারেন। এছাড়া সমপরিমাণ
গ্লিসারিন ও গোলাপজলের মিশ্রণ পায়ের ফাটা স্থানে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন।
এতে পা ফাটা ও ব্যথা কমবে। গ্লিসারিন ত্বক নরম রাখে।
অন্যদিকে গোলাপজলে রয়েছে ভিটামিন এ, বি ৩, সি, ডি ও ই।
আরও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। দেহের চাহিদা অনুযায়ী প্রচুর পানি পান করা। ত্বকের
শুষ্কতায় পা ফাটার মতো সমস্যাগুলো বাড়ে।
নিয়মিত যতেœর পরও যদি পা ফাটা সমস্যা না কমে, তাহলে অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
শীতে পা ফাটা-প্রতিকার